টাঙ্গাইল ১০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ খবর :
কালিহাতীতে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান ২০২৪ এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত কালিহাতীতে ৪ দিন যাবত মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ মধুপুরে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারের অপরাধে ৫টি রাইস মিলে জরিমানা বাসাইলে আ.লীগের সাবেক সভাপতি গাউস আটক কালিহাতী উপজেলা মহিলা দলের উদ্যোগে নারীদের মধ্যে তারেক রহমানের ৩১ দফা প্রচারে কর্মী সভা অনুষ্ঠিত কালিহাতীতে ৫৩ তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত মধুপুরে ক্লিনিক ও ফার্মেসীতে ৬০ হাজার জরিমানা কালিহাতীর বাংড়া’তে বিপদজনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা মরা আমগাছ: বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা কালিহাতীতে যুবদলের দু’গ্রুপের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন কালিহাতীতে পিক-আপের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
ব্রেকিং নিউজ :
  • এটিভি বাংলা  অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রতিনিধি (সাংবাদিক) নিয়োগ দেশের বিভিন্ন  জেলা, থানা/উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘এটিভি বাংলা  নিউজ পোর্টাল ’ পত্রিকায় সংবাদ প্রতিনিধি (সাংবাদিক) নিয়োগ দেয়া হবে। ‘এটিভি বাংলা [email protected]০১৭১৪৯১৮২৫৫

হারিয়ে যাচ্ছে কালিহাতীর ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প 

শুভ্র মজুমদার, বিশেষ প্রতিনিধি 
  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
  • / ৩৬২ বার পড়া হয়েছে

হারিয়ে যাচ্ছে কালিহাতীর ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প

 

শুভ্র মজুমদার, বিশেষ প্রতিনিধি:

বাংলাদেশের ঐতিহ্যে, লোকাচারে, জীবন ধারায় পাটির ব্যবহার ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ে অনুষ্ঠানে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অন্যতম উপাদান ছিলো পাটি। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের তপ্ত দুপুরে শীতলতা বয়ে আনে শীতল পাটি।

 

কিন্তু কালিহাতী উপজেলায় সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প। প্রায় ৪০ হাজার লোক পাটি শিল্পের সাথে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি পাটি বাজার জাত হওয়ার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে পাটি ও পাটি শিল্প। উপজেলার বাংড়া, সিলিমপুর, খিলদা, ধুনাইল, এলেঙ্গা, লাঙ্গলজোড়া, ঘূনি,  সালেংকা, পাটিতাপাড়া, পিচুটিয়া, আউলটিয়া, মহিষজোড়া সহ আরও বেশকিছু গ্রামে দেখা যেত  বেত ক্ষেত ।

 

এ ক্ষেতগুলো দেখতেও অনেক সুন্দর। কিন্তু  অনেক পাটি শিল্পী পরিবার ভারতে পাড়ি জমিয়েছে। বর্তমানে উপজেলায় ২০ হাজারের মতো পাটি কারিগর আছে। ব্যবসা মন্দার কারণে বেশ কিছু পাটি কারিগর অন্য পেশা বেছে নিয়েছে। ফলে  বেত ক্ষেতের জমিগুলোতে আবাদ হচ্ছে অন্য ফসল।

 

এ শিল্পে দেখা যায়, বেতের আবরণ ৪ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। ওই ৪ অংশ দিয়ে ৪ ধরনের পাটি ও আনুসাঙ্গিক জিনিস  তৈরি করে থাকেন। প্রথম ভাগ শীতল পাটি, ২য় ভাগ বুকা পাটি, ৩য় ভাগ ছাইলা ও ৪র্থ ভাগ দিয়ে আতি যা ধানের আটি, পানের বিড়া ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকেন তারা। পাটিগুলো আশেপাশের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়। কালিহাতী উপজেলার সেন বাড়ি গ্রামের  কারিগর  গোপাল সেন বলেন, বর্তমানে আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। প্লাস্টিকের পাটি আসাতে বেতের পাটির চাহিদা একদম কমে গেছে। পিচুটিয়া গ্রামের পাটি শিল্পী  সুশান্ত চন্দ্র ধর বলেন, এ কাজ ছাড়া তো আর কোন কাজ শিখিনি।

 

এই পাটি বানিয়ে হাটে-বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়। আগের মতো বেচাকেনা  নেই। এখন খুব কষ্ট করে চলতে হয়। অপরদিকে চাটিপাড়া গ্রামের পাটি শিল্পী স্বপন কুমার দে বেতের পাটি দিয়ে নানা ধরনের লেডিস ব্যাগ, লেডিস জুতা, ছেলেদের মানিব্যাগ, বেল্ট, ছেলেদের জুতাসহ অনেক ধরনের সামগ্রী তৈরী করে বাজারজাত করছেন। উপজেলা পাটি শিল্প সমিতির সভাপতি দিনেশ চন্দ্র দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক হরে কৃষ্ণ পাল বলেন, সরকারিভাবে সহজ শর্তে ব্যাংক লোনের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারলেই এ পাটি শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদত হুসেইন বলেন, কালিহাতী উপজেলার এ  ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য যদি কোন পাটি শিল্পী, পাটি ব্যবসায়ী ও কোন উদ্যেক্তার আর্থিক সহায়তা ও ঋণের প্রয়োজন হয় তাহলে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহায়তা করবে।

 

শুভ্র মজুমদার

 কালিহাতি, টাঙ্গাইল

০১৭১৮-২৭৪৪৯৫

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

হারিয়ে যাচ্ছে কালিহাতীর ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প 

প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪

হারিয়ে যাচ্ছে কালিহাতীর ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প

 

শুভ্র মজুমদার, বিশেষ প্রতিনিধি:

বাংলাদেশের ঐতিহ্যে, লোকাচারে, জীবন ধারায় পাটির ব্যবহার ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ে অনুষ্ঠানে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অন্যতম উপাদান ছিলো পাটি। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের তপ্ত দুপুরে শীতলতা বয়ে আনে শীতল পাটি।

 

কিন্তু কালিহাতী উপজেলায় সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প। প্রায় ৪০ হাজার লোক পাটি শিল্পের সাথে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি পাটি বাজার জাত হওয়ার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে পাটি ও পাটি শিল্প। উপজেলার বাংড়া, সিলিমপুর, খিলদা, ধুনাইল, এলেঙ্গা, লাঙ্গলজোড়া, ঘূনি,  সালেংকা, পাটিতাপাড়া, পিচুটিয়া, আউলটিয়া, মহিষজোড়া সহ আরও বেশকিছু গ্রামে দেখা যেত  বেত ক্ষেত ।

 

এ ক্ষেতগুলো দেখতেও অনেক সুন্দর। কিন্তু  অনেক পাটি শিল্পী পরিবার ভারতে পাড়ি জমিয়েছে। বর্তমানে উপজেলায় ২০ হাজারের মতো পাটি কারিগর আছে। ব্যবসা মন্দার কারণে বেশ কিছু পাটি কারিগর অন্য পেশা বেছে নিয়েছে। ফলে  বেত ক্ষেতের জমিগুলোতে আবাদ হচ্ছে অন্য ফসল।

 

এ শিল্পে দেখা যায়, বেতের আবরণ ৪ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। ওই ৪ অংশ দিয়ে ৪ ধরনের পাটি ও আনুসাঙ্গিক জিনিস  তৈরি করে থাকেন। প্রথম ভাগ শীতল পাটি, ২য় ভাগ বুকা পাটি, ৩য় ভাগ ছাইলা ও ৪র্থ ভাগ দিয়ে আতি যা ধানের আটি, পানের বিড়া ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকেন তারা। পাটিগুলো আশেপাশের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়। কালিহাতী উপজেলার সেন বাড়ি গ্রামের  কারিগর  গোপাল সেন বলেন, বর্তমানে আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। প্লাস্টিকের পাটি আসাতে বেতের পাটির চাহিদা একদম কমে গেছে। পিচুটিয়া গ্রামের পাটি শিল্পী  সুশান্ত চন্দ্র ধর বলেন, এ কাজ ছাড়া তো আর কোন কাজ শিখিনি।

 

এই পাটি বানিয়ে হাটে-বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়। আগের মতো বেচাকেনা  নেই। এখন খুব কষ্ট করে চলতে হয়। অপরদিকে চাটিপাড়া গ্রামের পাটি শিল্পী স্বপন কুমার দে বেতের পাটি দিয়ে নানা ধরনের লেডিস ব্যাগ, লেডিস জুতা, ছেলেদের মানিব্যাগ, বেল্ট, ছেলেদের জুতাসহ অনেক ধরনের সামগ্রী তৈরী করে বাজারজাত করছেন। উপজেলা পাটি শিল্প সমিতির সভাপতি দিনেশ চন্দ্র দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক হরে কৃষ্ণ পাল বলেন, সরকারিভাবে সহজ শর্তে ব্যাংক লোনের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারলেই এ পাটি শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদত হুসেইন বলেন, কালিহাতী উপজেলার এ  ঐতিহ্যবাহী পাটি শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য যদি কোন পাটি শিল্পী, পাটি ব্যবসায়ী ও কোন উদ্যেক্তার আর্থিক সহায়তা ও ঋণের প্রয়োজন হয় তাহলে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহায়তা করবে।

 

শুভ্র মজুমদার

 কালিহাতি, টাঙ্গাইল

০১৭১৮-২৭৪৪৯৫